Friday, April 22, 2011

DUTI KABITA / Ferdous Nahar

দুটি কবিতা 

ফেরদৌস নাহার



আমার সন্ধ্যা বিডির সকাল

কী ভাবে বেঁচে আছি,
কী ভাবে বেঁচে নেই
এইসব জোড়াতালির গল্প
করতে করতে
হাঁটছিলাম পাশাপাশি
হাতে একবোঝা জিনিসপত্র
ফোনকার্ড কিনতে ভুলে গেছি
দমকা বাতাসে
গলার মাফলার মাথার টুপি
উড়ে যেতে যেতে ধরে ফেলি

উষ্ণতায় যেতে হবে
কফিতে চুমুক, বাইরে বরফ
ঝির ঝির একটানা নরম তুলোট
সেলফোন বেজে ওঠে, কথা হবে
হয়তো এজীবনে
এসব কথা না বললেও হতো
কিছু কথা ঘুম ভাঙা চোখে
আড়মোড়া ভেঙে তাকায়
কিছু কথা ঝিমাতে থাকে
ক্যাথেড্রেলের বারান্দায়

ঢাকাতেও এবার নাকি
খুব শীত পড়েছে
লেপের তল থেকে উঠে
বাচ্চাগুলো স্কুলে যায়
ঝিমাতে ঝিমাতে
মা ওদেরকে ধরে থাকে
পার্কের ঝরাপাতায়
আগুন পোহায় গোল হয়ে
ছেঁড়া সোয়েটারে নাক মুছে
যে যার মতো ফিরে চলে

আমার সন্ধ্যা এখন বিডির সকাল
কফিতে চুমুক দিয়ে এসব ভাবনা
আর কতকাল!



ছাপচিত্র

কী কাজে আজ সকাল সকাল আলোর দিকে!
কী ভেবে আজ বিশ্বমানের দাবা রেখে
তোমার সাথে খেলতে গেলাম ভরদুপুরে
অকাল বোধন হয়তো- নয়তো একেই বলে
মাঝ নদীতে দরদ ঢালা জলের স্রোতে
ভেসে যাবার ইচ্ছে হলো নতুন করে।
কে আছো গো আমার কাছে বায়না ধ’র
খুব নিচুতে বনস্পতি হলে জানি
মাথায় তুলে নিয়ে যাবার কায়দা বাড়ে।
ওই পাখিটা আজকে নাকি উড়বে নাকো
দরজা জানলা সটান খুলে বসে থাক
পাখির ঘরে আজ পাখালি আয়োজনে
দিব্যি দেবে আকাশ বাতাস মাতাল করে।

আমার নাম কি বাসন্তি না অন্য কিছু?
কয়েক যুগের সাঁতার কাটা শিখে নিয়ে
মৎস্য হবার বাসনাতে কাটল জীবন
বিজন বনের পাশে ছিল ভরা নদী
ডুব সাঁতারে ভেসে গেলাম রন্ধ্র-গানে
যৌবন বড়ো সস্তা দামে বেঁচে ছিলাম
এখন দেখি মূল্যমানের চরকা উসুল
ভুল বেহালায় আপন মনে সুর টেনেছি
কিছুটা তার ছিঁড়ে গেছে শ্রাবণ দিনে
কিছুটা সুর হারিয়ে গেছে বেখেয়ালে।
দাবার চালে মাত উঠেছে একটু রয়ে,
ওসব ঘরে তোমায় দেখে বুঝে নিলাম
এই বাজারে কী আর হবে শর্ত রেখে
মেখেছি সেই কাঙালপনা ছাপচিত্র
নিজের মুখে প্রলেপনের কারসাজিতে
হারিয়ে গেছি এই পৃথিবীর দূরাকাশে 
হালকা পলকা পর্যটনে এঁকে বেঁকে
যা উড়ে যা জীবন যাপন শেকড়বাকড়
আজ পৃথিবীর শরীর ভরা জ্বরের আঁচর
প্যাঁচ খেয়ে যায় ঘুমের ভেতর এদিক সেদিক
নাভিশ্বাসে দম হেঁকেছি হাড়ের নাচন।

Tuesday, April 19, 2011

BODH / Shahid Kadri

বোধ

শহীদ কাদরী



(মাহবুব হাসান-কে)

শালিক নাচে টেলিগ্রাফের তারে,
কাঁঠালগাছের হাতের মাপের পাতা
পুকুর পাড়ে ঝোপের ওপর আলোর হেলাফেলা
এই এলো আশ্বিন,
আমার শূন্য হলো দিন
কেন শূন্য হলো দিন?

মহাশ্বেতা মেঘের ধারে-ধারে
আকাশ আপন ইন্দ্রনীলের ঝলক পাঠায় কাকে?
ছাদে-ছাদে বাতাস ভাঙে রাঙা বৌ-এর খোঁপা
এই এলো আশ্বিন,
আমার শূন্য হলো দিন
কেন শূন্য হলো দিন?

শিউলি কবে ঝরেছিল কাদের আঙিনায়
নওল-কিশোর ছেলেবেলার গন্ধ মনে আছে?
তরুণ হাতের বিলি করা নিষিদ্ধ সব ইস্তেহারের মত

ব্যতিব্যস্ত মস্তো শহর জুড়ে
এই এলো আশ্বিন,
আমার শূন্য হলো দিন
কেন শূন্য হলো দিন?

কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই (১৯৭৮)

সৌজন্যে : কবিতার পাঠ 

ATMOKATHON / Parthapratim Kanjilal

আত্মকথন 

পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল



চলিত ক্রিয়াপদের বাংলা আর লিখিতে ইচ্ছা হয় না। এই বাংলা বড়ো সাহিত্যিক। যদিও আমার বয়স ত্রিশ বৎসর ও ২মাস পূর্ণ হইয়াছে এবং এক্ষণে আমি রবিবারের মধ্যাহ্নে, ত্রিতলে, খাটে বসিয়া আছি, চারিদিক বেশ শান্ত, একটি কাক ডাকিতেছে—কেমন ধারণা হইতেছে যে ইহার মধ্যেই মিশিয়া আছে আমারই মরণোন্মুখতা। কোনো-না কোনো একটি সত্য বলিতে ইচ্ছা করিতেছে। আমার ব্যক্তিগত সত্য। জীবন এপর্যন্ত যতোটা যাপিত হইয়াছে, তাহার তথ্য ও চিত্রের ভিত্তিতে কিন্তু এই সত্য প্রস্তুত নয়। কেবলি মনে হইতেছে আঁটপুর বা ঐরকম কোনো একটা গ্রামের বাড়িতে বসিয়া থাকিতে পারিলে বিলক্ষণ শান্তি হইত। না, যে থাকিত সে কোনো ত্রিশবয়সী লোক নয়। তাহার বয়স কোনোমতেই সতেরোর বেশি হইবে না। সে ধুতি ও হাতকাটা গেঞ্জি পরিবে। এখন নির্জন দুপুর, কলাঝাড় পার হইয়া সে জামের বনে যাইতেছে। সেখানে কি একটি বালিকা থাকিবে না, যে তাহাকে আঁকাবাঁকা হরফে বহু সাধ্যসাধনায় একটি চিঠি দিয়াছে কিছুদিন আগে—‘কেমন আছ। আমার প্রণাম নিবে।’ তাহার মুখ ও হাবভাবের বর্ণনা, আমি, ওই সতেরো বছরের হাতকাটা গেঞ্জি ও ধুতি পরা যুবা, দিতে মনস্থ করিতেছি না; শুধু পাঠকের সঙ্গে কথা বলিতে ভাল লাগে তাই বলিব, তাহার নাম পূর্ণশশী। কতবার ভাবিয়াছি—ঐ তো সে এখনো ভাবিতেছে আজ হয়তো তাহার হাত তাহার বশ মানিবে না, আলিঙ্গন করিবে; আজ হয়তো তাহার মুখ চুম্বনে চুম্বনে পূর্ণশশীকে জানাইয়া দিবে সে ডাগর হইয়াছে, সে শহরে গিয়া জানিয়াছে; কিন্তু ঐ তাহাকে দেখা যায়, পূর্ণশশীর হাত হইতে জাম খাইতেছে যেভাবে পোষা ঘোড়ায় মানুষের নিকট হইতে দানা খায়, শুধু একটি করতল পূর্ণশশীর পদমূলে। জামবনে হাওয়া অতি ধীরে বহিতেছে। পাঠক, আপনাকে ভগবান জানিয়া বলিতেছি, আমি এ-ই।




সৌজন্যে : কবিতার পাঠ 

PIYA MON BHABE / Utpalkumar Basu

উৎপলকুমার বসু
পিয়া মন ভাবে


১.
খট্টাশ- প্রসূতিপারা, স্ফীতোদর, নৌবাহিনীর নেতা।
আশ্রয়দাতা তুমি, এই নাবিকশ্রেষ্ঠরে তীরে বেঁধে রাখো
ঊষাপতি অকস্মাৎ মধ্যাহ্নকটালে যেন অস্থির, অনিশ্চয়-
ঢেউ দিগন্তে লাফিয়ে ওঠে- সাতসমুদ্রের লবণসার

লাগে আকাশের গায়- হায়, দাগানো তালিকা এই
কর্মচারীর হাতে, তাই নিয়ে ঘুরি- এত নাম, শতাধিক,
এদের কোথায় সন্ধান পাব? কোন জনপদে? কোন
গোপন কৌশলে এদের দ্বীপান্তরী করা যাবে? জলচর

দেব ও দেবতাগণে মিনতি জানাই, পায়ে পড়ি, এ-যাত্রা
উদ্ধার করো, ঠিক সময়মতোই যেন এদের গ্রেপ্তার করি,
অত্যাচারে দিকভ্রান্ত করে রাখি- যতণ জলযান অ-প্রস্তুত,

আমাদের তৈরি হতে যতণ লাগে।

২.
কতদিন লাফিয়ে নামিনি মাঠে। ইদানীং ধরা পড়ে যাই
চিহ্নের বাগানে। কখনো-বা ভণিতাবাজারে।

যে-দেহ ভৌতিক হয় তারও চাই খাদ্য ও ব্যায়াম-
পলায়নপর হতে পারা চাই।

ভাবি, যমুনা-পুলিনে যে বাঁশি বাজলো
সে কি পুলিশের বাঁশি?

ঐ গোঠে জেট-বিমানের ধ্বনি, ঐ বনে পারমাণবিক
কদম্বরেণুর ঘ্রাণ-

তারই মধ্যে বেঁচে থাকা- ন্যায় ও অন্যায় নিয়ে
কথা কাটাকাটি আছে।

(উৎপলকুমার বসুর নতুন কাব্যগ্রন্থ `পিয়া মন ভাবে' থেকে দুটি কবিতা , প্রকাশকাল: জানুয়ারি ২০১১, প্রকাশক: সপ্তর্ষি)

MADONBHASMER POR / Birendra Chattopadhyay

মদনভস্মের পর

বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়



বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২/৯/১৯২০ - ১১/৯/১৯৮৫)
 
 
কুশল, তোমার কুশল পার্বতী!

স্বচ্ছ সরোবরে দেখ বয়েস ভাসে রক্তকমল
তুমি বুকের চন্দনের শোভা চোখের জলে ধুয়ে এসেছ,
বলো তোমার প্রার্থনা কী আছে কন্যা যার জন্য পদ্মকোরক শুকিয়ে যায়?
তুমি শ্মশানভস্ম মাখবে ব’লে কোমল স্তন কঠিন করো
সন্ন্যাসিনী;
কুশল, তোমার কুশল।


তৃণতরঙ্গ রৌদ্রে। রাত্রি শিবরাত্রি: ১৩৭৪


সৌজন্যে : কবিতার পাঠ 

RAMPROSADER KAACHHE KSHAMA PRARTHONAPURBOK / Nirmalendu Gun

রামপ্রসাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক 

নির্মলেন্দু গুণ


ইতিহাস কী লিখবো মাগো,
আমি তো আর শেষ জানি না।
এই যে মহাকালের ধ্বজায়
রাজার কথা লিখছে প্রজায়
আমি সে-ইতিহাস মানি না।

তোর মাঝে মা অনন্তকাল
ফেলেছে মন মোহিনীজাল।
সবাই যে জাল ছিঁড়তে জানে
সময় কি আর সে জাল টানে?
আমিও সেই জাল টানি না।

তোর প্রেমের ঐ সিংহাসনে,
সবাই কি আর বসতে জানে?
কাব্যে-সাহিত্যে-গানে
আমি যমের বুকে বজ্র হানি,
কমের বুকে শেল হানি না।

কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।
 
সৌজন্যে : কবিতার পাঠ


SRIKRISHNER PROTI ARJUN / Jugantar Chakrabarty

শ্রীকৃষ্ণের প্রতি অর্জুন 

যুগান্তর চক্রবর্তী


যুগান্তর চক্রবর্তী (জন্ম. রেঙ্গুন ৩/১০/১৯৩৩ . মৃত্যু : ২০/০২/২০১১ কলকাতা )

উত্তর তোমার সব জানা আছে, দিয়েছ উত্তর।
কিন্তু জিজ্ঞাসাই যার জীবন, অব্যক্ত হতে যারে
অব্যক্তে পৌঁছাতে ফের ব্যক্ত হতে হয় বারে বারে
সেই জানে কুরুক্ষেত্র,—তাই প্রশ্ন, তাই, অতঃপর...

বিপন্নতা আমারই তো, পরাজয়, সেও তো আমার,
জানি তুমি রাখো নাই আমার ধ্বংসের কোনো সীমা।
চতুর্দিক জুড়ে দেখি জল মাটি পাতাল নীলিমা
এবং তোমার মুখ,—তাই প্রশ্ন, তাই, অশ্রুধার...

অগ্রসর হতে হবে আরো দূর, কিন্তু কত দূর?
শিল্পের আক্রোশ থেকে চৈতন্যের দূরত্ব যতটা?
ব্যবহৃত হতে হবে, তবু যার শেষ বিরুদ্ধতা
ভাঙে সব অভিজ্ঞান, গর্ভের বিশাল অন্তঃপুর

দীর্ণ করে। শুরু হল নশ্বর অলীক যাতায়াত।
তাই প্রশ্ন অরুন্তুদ, ধর্মহীন, তাই, রক্তপাত...



স্মৃতি বিস্মৃতির চেয়ে আরো কিছু বেশী, ১৯৬৮
 
সৌজন্যে : কবিতার পাঠ


UTSARGO / Jugantar Chakrabarty

উৎসর্গ 
যুগান্তর চক্রবর্তী
তোমার বুকের জামা তুমি খুলে দেবে নিজ হাতে,
আমি চাই। আমার নশ্বর হাত অন্যত্র রয়েছে।

আমি চাই উৎসর্গবিহীন
সব লেখা, সব প্রেরণার আগে তুমি।
...
তোমার বুকের পরে আজ কোনো অপর কবির
দাবি নাই। সমস্ত নশ্বর হাত অন্যত্র রয়েছে।

আমাদেরও মুখোমুখি শুতে হবে,
ওরা কি বোঝে না!

Monday, April 18, 2011

KOMOL GAANDHAAR / Sridarshini Chakraborty

কোমল গান্ধার 

শ্রীদর্শিনী   চক্রবর্তী 

গরাদ থেকে গরাদে তোমার চিঠি চলে যাচ্ছে ফার্দিনান্দ,
প্রত্যেক চিঠিতে তুমি ঝুলিয়ে দিয়েছ ট্যাগ,
মৃদুমন্দ ডিসকাউন্ট কুপন --
সেলের বাজার, তাতে মৃতবৎসা নাইটি বিক্রি করে।
কোণার দোকানে গান, নাটকের গুঞ্জন তাই
আমাকে সেখানে টেনে আনে --
অথচ চোখ বুজলেই সুবর্ণরেখা, আর ছলাৎছল বন্দরকথন ওড়ে
আর্বান সোনাটা বেয়ে মিরান্দার জন্য ডাক আসে -
বোঝানো গেলো না বলে এ'জন্মে উত্তর সাধিনি।
বাজার নির্জন আর
অস্বাভাবিক কিছু ওড়না বিক্রেতায় রঙদার,
ওদের হাতের ভাঁজে অবিকল ঝুলে আছে আমাদের অঙ্গীকারগুলি।

Sunday, April 17, 2011

SWAPNO NEI / Tushar Choudhury


JANOIKO KOBIR CHEYE / Shibayan Ghosh


EKJON DIABETIS,ONYOJON BREAST-CANCER / Sangjam Paul


EKGUCHCHHA KABITA / Joy Goswami










RUPANTAR / Siddhartha Sinha


EKGUCHCHHA KABITA / Taslima Nasrin





SAHITYABIDYA : EKTI SHOKPROSTAB / Amitabha Gupta


MONIPURER MAA / Subodh Sarkar


DUTI KABITA / Shyamalkanti Das


KARA JENO / Binay Majumdar


Thursday, April 14, 2011

DUTI KABITA / Shweta Chakrabarty


AAR KABYO NOY / Rupak Chakrabarty


MUK O BODHIRDER JONYO / Sanjib Neogi


EKGUCHCHHA KABITA / Rupak Chakrabarty



BRIKSHOROPON UTSAB / Krishnendu Ghosh


PRATIKI / Shreejato


CHITAR MANUSH / Barin Ghoshal



ASOJHYO KOSHTER KATHA / Prabir Dashgupta


SUFI SOURAV / Rabishankar bal


SHOK / Sandip Biswas


MAATHE / Binay Majumdar