Tuesday, March 27, 2012

SURYA NAKSHATRA NARI / Jibanananda das

                                                  









সূর্য নক্ষত্র নারী
জীবনানন্দ দাশ

তুমি আছো জেনে আমি অন্ধকার ভালো ভেবে যে-অতীত আর
যেই শীত ক্লান্তিহীন কাটায়েছিলাম;
তাই শুধু কাটায়েছি।
কাটায়ে জানেছি এই-ই শূন্যে, তবু হৃদয়ের কাছে ছিল অন্য-কোন নাম।
অন্তহীন অপেক্ষার চেয়ে তবে ভালো...

(বেলা অবেলা কালবেলা)

BUNO HNAS / Jibanananda Das

বুনো হাঁস
জীবনানন্দ দাশ

তারপর পড়ে থাকে, নক্ষত্রের বিশাল আকাশ,
হাঁসের গায়ের ঘ্রাণ-দু-একটা কল্পনার হাঁস;

মনে পড়ে কবেকার পাড়াগাঁর অরুণিমা স্যানালের মুখ;

উড়ুক উড়ুক তারা পউষের জ্যোৎস্নায় নীরবে উড়ুক

কল্পনার হাঁস সব — পৃথিবীর সব ধ্বনি সব রং মুছে গেল পর

উড়ুক উড়ুক তারা হৃদয়ের শব্দহীন জোছনার ভিতর।

(বনলতা সেন)

Monday, March 19, 2012

KAJORI GOLAP-14 / Punyoshlok Dasgupta

কাজরি গোলাপ-১৪
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত


বুক ভরে নেবো প্রচুর সবুজ ক্যাম্পেন হবে কাজরি মাখানো
স্রেফ নিসর্গ ষোড়শী-ওড়না বুটিক দিদিকে ড্রয়িং শেখবো
নাচের প্রলেপ মেখে নিয়ে আমি উড়ে যাব সেই প্যারিস আঁচলে
সেখানে আমার কাজরি-গোলাপ মহাভোজ দেবে প্রেমের আকাশে
জ্বর সেরে গেছে আইসক্রিমের ইতালি-ওয়াইন ট্র্যাজিক জার্নি
লালনের আমি আখড়া সাজাই ফরিদার গান পাখির পালক
ঢাকেশ্বরীর মুঠো মুঠো চাঁদ সেখানে আমার বাসর সাজাই
আমার জীবন বলিউড জানে ঠিকঠাক আছে রোমান্টিকেতে
পোস্টার দাও আকাশে বাতাসে কাজরি আমার পার্থসারথি
গ্রাফিক-মডেলে আমি জ্যোৎস্নার আলোকচিত্রী
নভেল লিখছি কাজরি জামান আমার রাত্রি আমার টেরেস
বুককেসে তার সাজানো রয়েছে কোলাজ-পাজামা রট আয়রন
কোষগুলো কেন এখনো অকেজ কাজরি গোলাপে স্নানের জল
খোলা রেখে দাও মনের জানলা ভালো করে আজ ঘুমোতে দাও

BHITOR-BAIRE BISHOM YUDDHO / Shakti Chattopadhyay

ভিতর-বাইরে বিষম যুদ্ধ
শক্তি চট্টোপাধ্যায়

ইচ্ছে ছিলো তোমার কাছে ঘুরতে-ঘুরতে যাবোই
আমার পুবের হাওয়া।
কিন্তু এখন যাবার কথায়
কলম খোঁজে অস্ত্র কোথায়
এবং এখন তোমার পাশে দাঁড়িয়ে-থাকা কুঞ্জলতায়
রক্তমাখা চাঁদ ঢেকেছে
আকুল চোখ ও মুখের মলিন
আজকে তোমার ভিতর-বাইরে বিষম যুদ্ধ পুবের হাওয়া।।
মনে মনে বহুদূর চলে গেছি
মনে মনে বহুদূর চলে গেছি - যেখান থেকে ফিরতে হলে আরো একবার জন্মাতে হয়
জন্মেই হাঁটতে হয়
হাঁটতে-হাঁটতে হাঁটতে-হাঁটতে
একসময় যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেখানে পৌঁছুতে পারি
পথ তো একটা নয় –
তবু, সবগুলোই ঘুরে ফিরে ঘুরে ফিরে শুরু আর শেষের কাছে বাঁধা
নদীর দু - প্রান্তের মূল
একপ্রান্তে জনপদ অন্যপ্রান্ত জনশূণ্য
দুদিকেই কূল, দুদিকেই এপার-ওপার, আসা-যাওয়া, টানাপোরেন –
দুটো জন্মই লাগে
মনে মনে দুটো জন্মই লাগে।

EK OSUKHE DUJON ANDHO / Shakti Chattopadhyay

এক অসুখে দুজন অন্ধ
শক্তি চট্টোপাধ্যায়


আজ বাতাসের সঙ্গে ওঠে, সমুদ্র, তোর আমিষ গন্ধ
দীর্ঘ দাঁতের করাত ও ঢেউ নীল দিগন্ত সমান করে
বালিতে আধ-কোমর বন্ধ
এই আনন্দময় কবরে
আজ বাতাসের সঙ্গে ওঠে, সমুদ্র, তোর আমিষ গন্ধ |
হাত দুখানি জড়ায় গলা, সাঁড়াশি সেই সোনার অধিক
উজ্জ্বলতায় প্রখর কিন্তু উষ্ণ এবং রোমাঞ্চকর
আলিঙ্গনের মধেযে আমার হৃদয় কি পায় পুচ্ছে শিকড়
আঁকড়ে ধরে মাটির মতন চিবুক থেকে নখ অবধি ?
সঙ্গে আছেই
রুপোর গুঁড়ো, উড়ন্ত নুন, হল্লা হাওয়ার মধ্যে, কাছে
সঙ্গে আছে
হয়নি পাগল
এই বাতাসে পাল্লা আগল
বন্ধ ক’রে
সঙ্গে আছে …
এক অসুখে দুজন অন্ধ !
আজ বাতাসের সঙ্গে ওঠে, সমুদ্র, তোর আমিষ গন্ধ ।

CHOTURDASHPODI KABITABOLI / Shakti Chattopadhyay

চতুর্দশপদী কবিতাবলী
শক্তি চট্টোপাধ্যায়


ভালোবাসা পেলে সব লন্ডভন্ড করে চলে যাবো
যেদিকে দুচোখ যায়- যেতে তার খুশি লাগে খুব ।
ভালোবাসা পেলে আমি কেন পায়সান্ন খাবো
যা খায় গরিবে, তাই খাবো বহুদিন যত্ন করে ।
ভালোবাসা পেলে আমি গায়ের সমস্ত মুগ্ধকারী
আবরণ খুলে ফেলে দৌড় ঝাঁপ করবো কড়া রোদে...
ভালোবাসা পেলে জানি সব হবে । না পেলে তোমায়
আমি কি বোবার মতো বসে থাকবো-
ভালোবাসা না পেলে কি আমার এমনি দিন যাবে
চোরের মতন, কিংবা হাহাকারে সোচ্চার , বিমনা--
আমি কি ভীষণ ভাবে তাকে চাই ভালোবাসা জানে।

EKBAAR TUMI / Shakti Chattopadhyay

একবার তুমি 
শক্তি চট্টোপাধ্যায়

একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা কর –
দেখবে, নদীর ভিতরে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে পড়ছে
পাথর পাথর পাথর আর নদী-সমুদ্রের জল
নীল পাথর লাল হচ্ছে, লাল পাথর নীল
একবার তুমি ভাল বাসতে চেষ্টা কর |

বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল - ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
সমস্ত পায়ে-হাঁটা পথই যখন পিচ্ছিল, তখন ওই পাথরের পাল একের পর এক বিছিয়ে
যেন কবিতার নগ্ন ব্যবহার, যেন ঢেউ, যেন কুমোরটুলির সলমা-চুমকি-জরি-মাখা প্রতিমা
বহুদূর হেমন্তের পাঁশুটে নক্ষত্রের দরোজা পর্যন্ত দেখে আসতে পারি |

বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল
চিঠি-পত্রের বাক্স বলতে তো কিছু নেই - পাথরের ফাঁক-ফোকরে রেখে এলেই কাজ হাসিল -
অনেক সময় তো ঘর গড়তেও মন চায় |

মাছের বুকের পাথর ক্রমেই আমাদের বুকে এসে জায়গা করে নিচ্ছে
আমাদের সবই দরকার | আমরা ঘরবাড়ি গড়বো - সভ্যতার একটা স্থায়ী স্তম্ভ তুলে ধরবো |

রূপোলি মাছ পাথর ঝরাতে ঝরাতে চলে গেলে
একবার তুমি ভালবাসতে চেষ্টা করো |


Saturday, March 10, 2012

EK KURI MAARKAATARI PREM / Murari Sinha

এক-কুড়ি মারকাটারি প্রেম (প্রথম দশ) 
মুরারি সিংহ
 
1.আমাদের বহু-দলীয় পতাকা-মুখর শহরে ছ-লেনের রাস্তা বেয়ে ছ-কাটের সায়া পরে খুব কাছে আসে যে নারী তার নাভিমূলে এক পথভোলা সুগন্ধ আমাকে চিনিয়ে দেয় আমার নতুন মাধুকরী আমাকে দেখায় তার বৃষ্টির ধূমঘরে এক নিরালা রেলপথ
2.আমার কোনো নদী নেই কোনো নৌকোও নেই তবু দেখি প্রেমের পথে হাঁটতে হাঁটতে কখন যেন ছোটো ছোটো নৌকাডুবিতে বুকপকেট ভারি হয়ে ওঠে
3. সামনের রাস্তা বেয়ে যখন তুমি হেঁটে যাও তখন পথের চারপাশে যে ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে তার খানিকটা এসে আছড়ে পড়ে আমার এই বারান্দায় আর আমি এক ঠা ঠা দুপুরবেলায় আক্রান্ত হই চাঁদের আলোয়
4.কীভাবে যে বদলে যায় ইতিউতি এটা-সেটা দিন প্রেমের প্রহরে কেন বা এত লগ্নভ্রষ্ট চারপাশে সাজানো কেন রে
5.হৃদয়ের অভিন্ন কাছে এমন এক ভিন্ন হাতের ছাপ বার বার কে যে রেখে যায় এই অবেলা
6.প্রেমের পাগলামি থেকে খুব বেশি দিন সরে থাকতে হলে আমি সত্যি পাগল হয়ে যাব
7. তোমার আমার প্রেমের প্রহরে আমাদের রাস্তার পাশেই ঝুলে থাকে হিন্দু হোটেলের নীরব খাদ্য-তালিকা
8. পোশাকের পেয়ালা ছাপিয়ে উপচে পড়ছে তোমার যৌবন-জল-তরঙ্গ আর আবহমান আমলকীতে ভিজে যাচ্ছে আমার বসন্তকাল
9.খানিক আগে যে চেয়ারে তুমি বসেছিলে এখন সেখানে বসে আছে তোমার গায়ের গন্ধ
10.দেখি আজ এই চরম খরার দিনেও তুমি আমি আমরা কিছু বানিয়ে বলা মেঘ কিছু বানিয়ে বলা বৃষ্টি নিয়েই বেঁচেবর্তে আছি

NAAKCHHABI / Sooraj Das


EKHON , MEYETI / Sooraj Das


ETO SATORKOTA , TOBU / Sooraj Das